Valentine's Day - A Love Story Bangla

In this articale Valentine's Day - A Love Story Bangla

পয়লা ফাল্গুন। কাল ভ্যালেন্টাইনস ডে। আমি এমনিতে এসব দিনে খুব যে ভাবে থাকি তা নয়। নীল ঢিলে-ঢালা,আজানুলম্বিত একটা টিশার্ট,তাতে একটা থাম্বস-আপ চিহ্ন দেয়া। এটা পরেই বসন্ত-বরণে নামলাম ঢাকার রাজপথে। আজ নাহয় মনটা বসন্তের রঙ্গে রাঙ্গুক। দেহে শীতের বিদায়ের নীল। বাহ,পোশাক বিষয়ক ছোট এই জটিলতায় দামি দামি সব ভাবনা ভেবে নিলাম। অদিতির এই জামাটা একদমই পছন্দ না; পারলে পুড়িয়ে দেয়। সিদ্ধেশ্বরীর খন্দকার গলির সামনে দাড়িয়ে একটা ফোন দিলাম গাধাটাকে। -অদিতি বাসায় তুই? -হুম -১৫ মিনিটের মধ্যে বেইলি রোডের প্রিয়দর্শনের নীচে আয়। 

আমার রেডি হতেই তো ১৫ মিনিট লাগবে। -অতসত বুঝি না। ১৫ মিনিটের মধ্যে তর ভূগোল দেখতে চাই। -আচ্ছা আসতেছি। এটুকু বলেই আমি রওনা হলাম আবার। ছোট-খাটো এই মেয়েটাকে কখন বলতে শুনিনি আমার ব্যাপারে একটা ভাল কথা বলতে। তাও ওকে কতটা ভাল লাগে তার পরিমাণটা কখনই হিসেব করা হয়নি। এসব ভাবতে ভাবতে বইঘর-মনোয়ারা হাসপাতাল একে একে পার করলাম। ঢাকার এই দিকটায় নারী জাতির আনাগোনা প্রবল। তাদের অনেকেই নিদাঘ হরিণী। 

Valentine's Day - A Love Story Bangla

এই বিশ্ব সুন্দরীদের কেউই আমাকে তাদের পটলচেরা চোখের আওতায় আনে বলে আমার মনে হয় না। আর কেউ আনলেও তা আমার কাকের নীড়ের মত চুলগুলোর জন্য। হাঁটতে হাঁটতে ভিএনসির কলেজগেটের সামনে পৌঁছলাম। এখানে ময়লার একটা বিশাল ডিপো আছে। সেখানে অজস্র কাক। একনাগারে বায়স পর্যবেক্ষণের এক পর্যায়ে আবিষ্কার করলাম কাকের কালটা অনেক বেশি বেপরোয়া। এই রঙ্গা জামা কোনো মেয়ে পরলে তার উরে যাবার অবস্থা হওয়ার কথা। কিন্তু বেচারা কাক এই রঙ নিয়েই বিপদে। আজ কাকের কা-কা শব্দটা বেশ ভাল লাগছে। 

খুব সম্ভবত পাখিগুলো তের পেয়েছে আজ বসন্ত। ধীরে ধীরে আর সামনে এগিয়েই যাচ্ছিলাম-হঠাৎ টান খেলাম।এখানে কি করিস? -কাক দেখি। -বসন্ত কোকিলের। -সেটা তো কাকের জন্যই হয় - হাইপোথেটিকাল কথা বলবি না একদম। মাইর খাবি। আচ্ছা। হঠাৎ খেয়াল করলাম অদিতি আজ একটা ময়ুর-রাঙ্গা ড্রেস পরেছে। মনে মনে ভাবলাম,বাহ মেয়েটার রুচি বেড়েছে। ভাবতে ভাবতে ময়ুর-কাকের মাঝে একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা দাড় করে ফেলছিলাম। হঠাৎ আবার ডাক খেলাম। -রিকশা নিয়েছি। আয়। আমি সুবোধ বালকের মত গিয়ে উঠলাম। 

রোমান্টিক ভালোবাসার ছোট গল্প

কই যাচ্ছি? -ধানমণ্ডি। -রাগ করেছিস? -না, আমার ফেইসটাই এমন। -হ্যাঁ, এটা ঠিক, তুই দেখতে ভাল না। হাসলে হনুমানের মত লাগে। হঠাৎ হেসে উঠল ও। অর এই হনুমানবিক হাসিটা এক অদ্ভুত তৃষ্ণা জাগায়। ওকে কখনো বলা হয়নি। ভাবছি একদিন সাহস করে বলে দিব। আবার বললাম, -ভাল দেখা যাচ্ছে। -তোকে একদম জঘন্য। -থ্যাংকস। তোর সাথে উঠেছি। আমাকে আর কে দেখবে। -বিশ্ব-বাজারে তেলের অনেক দাম। স্বলপ মাত্রার বোল্ড হয়ে একটা কথাই বললাম-‘আচ্ছা’। এরকম হাবিজাবি বলতে বলতে রবীন্দ্র সরোবর থেকে একটু দূরে এসে নামলাম। 

বেইলি রোড থেকে ধানমণ্ডি-প্যারিস থেকে রোম। এখানকার বাতাসে নাইট্রোজেন আর অক্সিজেনের চেয়ে প্রেমের ঘনত্ব বেশি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, -সবাই কি আমাদের কাপল ভাবছে? -কে কি ভাবলো তাতে কি আসে যায়? -ভাবলে অবশ্য আমার স্ট্যান্ডার্ড বাড়ে। তোর স্ট্যান্ডার্ড বিএসটিআই ও বাড়াতে পারবে না। নগদে এই পচানি খেয়ে আমার মোটা চামড়ার মনের খানিকটা উঠে গেল। বাকি সারাটা দিন দুজন মিলে এখানে ওখানে ব্রাউনীয় গতিতে ঘুরাঘুরি করলাম। সন্ধ্যায় রিকশা করে ফিরে আসছিলাম। হঠাৎ ও বলল, -তোকে একটা গিফট দিব,নিবি? -দে। -আগে বল নিবি? -সন্দেহজনক। আচ্ছা দে। 

নতুন ভালোবাসার গল্প


হঠাৎ ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে কী যেন করল। তারপর আবার ব্যাগে রেখে দিল। -কী গিফট বল? এর মধ্যেই মোবাইল ভাইব্রেট করে উঠল। মেসেজ এসেছে। আগ্রহভরে ওপেন করলাম। একটা মাত্র লাইন লেখা। ৪৮ কেজির এই বিশাল মানুষটা তোকে দিয়ে দিলাম।“ অবাক হলাম। ও ভাবছিলাম মেয়েটাকে আজ-কালের মধ্যেই বলে দিব।


 শেষ পর্যন্ত মেয়েটাই সাহস করে ফেলল। ওর দিকে একবার তাকালাম। সোডিয়াম আলোতে অদিতিকে মায়া-হরিনীর মত লাগল। উত্তর দেয়ার ভাষা হাতড়াতে থাকলাম। উহু, পেলাম না। তখন ভাষা ছেড়ে হাসি দিয়ে কাজটা সেরে নেয়ার চেষ্টা করলাম। সেটাও পারলাম না। ইচ্ছে করছিল মেয়েটার সরু কব্জিটা ধরে বসে থাকি। পরক্ষনেই ভাবলাম, “নাহ, হাত ধরাটা না হয় কালকের জন্যেই রেখে দেই।

Post a Comment

0 Comments